Tuesday, December 23, 2008

কালক্রমে বেড়ে ওঠা বড়দিন উৎসব

বড়দিন (Christmas) উদযাপনের ইতিহাস কমপক্ষে ৪০০০ বছরের পুরোনো। যীশু খ্রীস্টের জন্মের প্রায় দু হাজার বছর পূর্ব থেকেই বিভিন্ন ঐতিহ্যগত প্রথা থেকেই এ উৎসব পালন করা শুরু হয়। যীশুর সঠিক জন্ম তারিখ নির্ধারন করা সম্ভব হয়নি। ইতিহাস থেকে জানা যায় প্রথম আনুষ্ঠানিকভাবে বড়দিন উৎসব উদযাপন শুরু হয় ৯৮ খ্রীস্টাব্দ থেকে। যীশুর জন্মদিনকে ধুমধাম করে উদযাপন করার জন্য ১৩৮ খ্রিস্টাব্দে রোমের বিশপ আদেশ দেন। ৩৫০ খ্রীস্টাব্দে রোমের আরেকজন বিশপ, জুলিয়াস-১ম ২৫শে ডিসেম্বরকে বড়দিন উদযাপনের জন্য পছন্দ করেন।

সভ্যতাপূর্ব সময়ে উদযাপিত বেশ কিছু উৎসবের ধারাবাহিকতায় পূর্ণাঙ্গ রূপ পেয়েছে আজকের এই বড়দিন উৎসব। নিচে এর কয়েকটির বর্ণনা দেয়া হলো।

[sb]মেসোপটেমিয়ার নববর্ষ উৎসব:[/sb]:

বড়দিন উৎসবের প্রাচীন উৎস হিসেবে এ উৎসবকে গন্য করা হয়। সেমোপটেমিয়ানগন বহু খোদায় বিশ্বাস করত। আর এই খোদাদের গুরু ছিল মারদুক। মেসোপটেমিয়ানরা বিশ্বাস করত যে, মারদুক প্রতি বছর শীত মওসুমে পৃথিবীর জন্মের পূর্বেকার রয়ে যাওয়া জন্জালের বিরুদ্ধে যুদ্ধ করতে ধরায় নেমে আসে। আর এ যুদ্ধে মারদুককে সহায়তা করার জন্যই মেসোপটেমিয়ানরা শীতকালে ১২ দিন ব্যাপি "জাগমুক" নামে এক জমজমাট উৎসবের আয়োজন করত।

[sb]পারস্য ও ব্যবিলনীয় "সাশী" উৎসব:[/sb]

পারস্য ও ব্যবিলনীয়রাও শীতকালে ঠিক একই রকম একটি উৎসবের আয়োজন করত যা সাশী নামে পরিচিত। এ উৎসবের উদযাপনের একটা মজার অংশ ছিল। উৎসবের এ অংশে মনিব এবং তাদের কৃতদাসরা নিজেদের স্থান পরিবর্তন করত। অর্থাৎ মনিবরা হয়ে যেত কৃতদাস এবং কৃতদাসরা হয়ে যেত মনিব।

[sb]ইউরোপের সোলসটিস উৎসব:[/sb]

প্রাচীন ইউরোপীয়রা প্রেতাত্না, ডাইনী এবং ভূতে বিশ্বাস করত। সোলটিস উৎসব পালন করা হতো শীতের সময়, যখন দিন ছোট হয়ে যায় এবং রাত্রিকাল দীর্ঘ হয়ে যায়। রাত যদি আর না ফুরোয় এই ভয়ে সূর্যকে ফিরিয়ে আনার জন্য প্রাচীন ইউরোপীয়রা শীতকালে বিভিন্ন ধরনের বিশেষ ধর্মীয় অনুষ্ঠানের আয়োজন করত।

[sb]স্ক্যন্ডিন্যাভিয়ান ইউলটাইড উৎসব:[/sb]

স্ক্যন্ডিনেভিয়ায় শীতকালে সূর্য অনেকদিনের জন্য মেঘ ও কুয়াশার কারনে হারিয়ে যায়। সূর্য লুকিয়ে যাওয়ার প্রথম দিন থেকে ৩৫ দিন পর স্ক্যন্ডিনেভিয়াবাসীরা তাদের একজন চরকে দুর পাহাড়ে পাঠিয়ে দিত। সেখান থেকে সূর্যের প্রথম আলোর দেখা পেয়ে সে সূর্যের প্রত্যাগমনের সুখবর নিয়ে জনপদে ফিরে আসত। এ খবর পেয়ে তারা এক জমজমাট উৎসবের আয়োজন করত। এ উৎসবকে ইউলটাইড বলা হত। এ উৎসবে জলন্ত ইউল কাঠে ঘেরা স্থানে বিরাট ভুরিভোজনের আয়োজন করা হত। কিছু কিছু স্থানে লোকজন গাছের সাথে আপেল বেধে আসন্ন বসন্তকে স্বাগত জানাত।

[sb]রোমানদের স্যাটার্নালিয়া উৎসব:[/sb]

রোমানদের দেবতা স্যাটার্নকে স্মরণ করে স্যাটার্নালিয়া উৎসবের আয়োজন করত। এ উৎসব ডিসেম্বরের মাঝামাঝিতে শুরু হয়ে ১লা জানুয়ারীতে শেষ হতো। ছদ্মবেশে রাস্তায় প‌্যারেড, বন্ধুদের বাড়িতে বেড়াতে যাওয়া, একে অপরকে শুভকামনা জানানো এ উৎসব উযাপনের প্রধান অংশ।

২৫ তারিখ শুধুমাত্র রোমানদের পাশাপাশি পারসিকদের কাছেও একটি পবিত্র সংখ্যা। সে সময় পারসিকদে "মিথরাইজম" ধর্ম ছিল রোমানদের খ্রীস্ট ধর্মের প্রধান প্রতিদ্বন্দ্বী। রোমান উপাসনালয়গুলো স্যাটার্নালিয়া উদযাপনকারীদের আনন্দ-স্ফুর্তি, আলো এবং উপহারকে গ্রহন করে তাদেরকে ধীরে ধীরে বড়দিন উদযাপনে সংশ্লিষ্ট করতে সফলভাবে সক্ষম হয়েছিল। আর এভাবেই কালক্রমে বড়দিন বিশ্বের একটি বড় উৎসবে পরিণত হল।

[su][si][sb]সবার জন্যই বড়দিন শুভ হোক।[/sb][/si][/su]

Friday, December 5, 2008

সংবিধানে যথার্থই লিখা রয়েছে...

গণপ্রজাতন্ত্রী বাংলাদেশের সংবিধান
২য় ভাগ - রাষ্ট্র পরিচালনার মূলনীতি

২৩৷ রাষ্ট্র জনগণের সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য ও উত্তরাধিকার রক্ষণের জন্য ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন এবং জাতীয় ভাষা, সাহিত্য ও শিল্পকলাসমূহের এমন পরিপোষণ ও উন্নয়নের ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন, যাহাতে সর্বস্তরের জনগণ জাতীয় সংস্কৃতির সমৃদ্ধিতে অবদান রাখিবার ও অংশগ্রহণ করিবার সুযোগ লাভ করিতে পারেন। (জাতীয় সংস্কৃতি)


--বাংলাদেশে লালনের আবির্ভাবের ১৩শ বছর পূর্বেই ইসলামের আবির্ভাব ঘটেছে। ইসলামের প্রচারে বাংলাদেশ একটি আদি ভূমি। তখন থেকেই ইসলামী সংস্কৃতির শক্তিশালি প্রভাব পড়েছে এদেশে। অপেক্ষাকৃত আদি এ সংস্কৃতির রক্ষাকল্পে লালনের কু-সংস্কৃতিকে একটু ঝেটিয়ে ছেঁকে দুরে রাখাটা অনেক বেশি জরুরী। সংস্কৃতির মান বাড়ে এমন ক্ষেত্রে সরকারের পৃষ্ঠপোষকতা যেমন জরুরী তেমনি জরুরী বাজে সংস্কৃতির অনুপ্রবেশে বাধা দেয়া।

২৪৷ বিশেষ শৈল্পিক কিংবা ঐতিহাসিক গুরুত্বসম্পন্ন বা তাৎর্যমণ্ডিত স্মৃতিনিদর্শন, বস্তু বা স্থানসমূহকে বিকৃতি, বিনাশ বা অপসারণ হইতে রক্ষা করিবার জন্য রাষ্ট্র ব্যবস্থা গ্রহণ করিবেন। (জাতীয় স্মৃতিনিদর্শন প্রভৃতি)

--এয়ারপোর্টের সামনের যে সুন্দর সবুজ চত্বর ছিল তাকে অপসারন করে একটা ইট পাথুরে মূর্তি তৈরী বাংলাদেশের গৌরব তথা সবুজ প্রকৃতির অবমাননা করার চেষ্টা হচ্ছিল। তার হাত থেকে রক্ষার জন্য কর্তৃপক্ষ বেশ ভাল ব্যবস্থা গ্রহন করেছে। তাই আমার মনে হয় এক্ষেত্রে সংবিধানের যথোপযোগী মূল্যায়ন করা হয়েছে। তবে ভন্ড পীরের নির্দেশে ঐতিহ্যবাহী ভাস্কর্য ভাঙার অপচেষ্টার বিরুদ্ধে আমি প্রতিবাদ জানাচ্ছি। ইসলামী সংস্কৃতি এবং মূল্যবোধ রক্ষায় এসকল ভন্ড পীরদের উৎখাত করা উচিত।